
এম. এস. আই শরীফ, ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার সোয়া লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন নিজেই পরিণত হয়েছে ‘রুগীতে’। চিকিৎসক সংকট, জনবল ঘাটতি ও ওষুধ-সরঞ্জামের অভাবে রোগীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা—জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক ও লোকবল নিয়োগ না দিলে স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে।
সরেজমিনে জানা যায়, ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে থাকার কথা ১৩ জন চিকিৎসকের। কিন্তু কর্মরত আছেন মাত্র ৫ জন। অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা গোমস্তাপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হামিদ সপ্তাহে মাত্র দুই দিন (সোম ও বুধবার) এ হাসপাতালে উপস্থিত হন। চক্ষু, মেডিসিন, গাইনী, নাক-কান-গলা, চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞসহ বেশিরভাগ চিকিৎসকের পদ শূন্য পড়ে আছে।
এ অবস্থায় রোগীরা পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় সাপে কামড়ানো রোগী সামউলকে (৪২) দ্রুত হাসপাতালে আনা হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ভ্যাকসিন নেই জানিয়ে রাজশাহী নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু হাসপাতালের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সও তেলের অভাবে অচল থাকায় রোগীকে ভাড়া মাইক্রোবাসে পাঠানো হয়।
এর আগে চলতি বছরের ১৩ জুলাই একইভাবে ভ্যাকসিন না থাকায় উপজেলার গোহালবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশিদ (৪৫) সাপে কামড়ে মৃত্যুবরণ করেন।
অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হামিদ জানান, নিয়ম অনুযায়ী ভ্যাকসিন থাকার কথা। তবে অ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ থাকার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ডিপোর কাছে ১২ লাখ টাকার বকেয়া থাকায় তেল দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় হাসপাতালের কার্যক্রম ‘জোড়াতালি দিয়ে’ চলছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি—“ত্বরিত পদক্ষেপ না নিলে ভোলাহাটের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে।”