
মাজেদুর রহমানঃ
বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পড়ন্ত বিকেলের গোধূলি লগ্নে মানবতার অঙ্গীকার ও সহায়তা নিয়ে ছুটলেন বগুড়া জেলা যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান।উদ্দেশ্য, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দুপচাঁচিয়া, আদমদীঘি এবং শান্তাহার এলাকার ৫জন অসুস্থ- অসহায় মানুষকে তুলে দেবেন মানবিক উপহার।বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা পেরিয়ে গভীর রাত।এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটে চলছেন নেতা কর্মীরা ক্লান্তিহীন ভাবে। গ্রামের অন্ধকার পথে তখন ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। নেই কোন শ্লোগান, নেই কোন জয়ধ্বনি। সারিবদ্ধ নেতাকর্মীরা মুঠোফোনের আলোয় এগিয়ে চলছে নব উদ্যোমে। তারেক রহমান প্রদত্ত উপহার প্রাপকদের চোখে এনে দিল স্বস্তির অশ্রু, হৃদয়ে জাগাল আশার প্রদীপ।
তালোড়া পৌরসভার মুনছুর রহমান , দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। পিত্তথলির পাথরের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। কথা বলে জানা গেলো, পিত্তথলির একাংশ কেটে অপসারণ করতে হবে। উপহার পেয়ে, রোগ শোকের ব্যথা ভুলে গেলেন।তার ভাষ্যমতে, "আমার মতো সামন্য কর্মীর কথা তারেক রহমান মনে রেখেছেন, সহযোগিতা পাঠিয়েছেন, এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছু হতে পারে না। আল্লাহ তারেক রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম জিয়াকে সুস্থ রাখুক, ভালো রাখুক।"
দুপচাঁচিয়া পৌরসভার শহীদ রামীমের মা রওশন আরা। জুলাই শহিদ জননী যখন উপহার পেলেন, ছেলে হারা মায়ের চোখে মুখে অজানা প্রাপ্তির আলোক বিচ্ছুরিত হলো।অকপটে স্বীকার করলেন, এই রাজনীতির জন্য ছেলেকে কতই না বকাঝকা করেছেন।স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তার এক ছেলে শহীদ হয়েছে কিন্ত আজ তিনি অনেক ছেলেকে পাশে পেয়েছেন। তারেক রহমানের মানবিকতায় মুগ্ধ এই শহিদ জননী অশ্রুশিক্ত নয়নে দুই হাত তুলে দোয়া করলেন। সন্তানের শহীদ হওয়ার স্মৃতিচারণে ভেঙে পড়লেন অঝোরে কান্নায়।
কোমারপুর ছাতিয়ানগ্রামের আব্দুল আজিজ মাস্টার বয়সের ভারে ন্যুব্জ, রোগশয্যায় ক্লান্ত দেহে হাঁটার জন্য ক্র্যাচের ভরসা নিতে হয়। তারেক রহমানের আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।সহায়তা হাতে নিয়ে তিনি যেন ফিরে পেলেন মানসিক শক্তি, বললেন—“এই সাহায্য শুধু অর্থ নয়, এটি জীবনের প্রতি নতুন আস্থা।”
একইভাবে আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের রামপুরার তোতা মন্ডল অসুস্থতার কারণে দাঁড়াতেও অক্ষম। অন্যের কাঁধে ভর দিয়ে দাঁড়াতে হয় তাকে।বগুড়া জেলা যুবদলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক তার বাড়ির উঠানে এসেছে, বারবার নেতাদের নিষেধ সত্ত্বেও মনোবল জুগিয়ে ঘরের দরজায় এসে যুবদল নেতাদের থেকে সাহায্য নেন।
শান্তাহার পৌরসভার রাকিবুল হাসান চঞ্চল, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে পড়ে মেরুদণ্ড ভেঙে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এখন শয্যাশায়ী তিনি, সঠিকভাবে বসা বা কথা বলাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত পরিবারের কাছে তারেক রহমানের সহায়তা হয়ে উঠেছে ডুবন্ত মানুষের ভরসার ভেলা। পাশে থাকা শাশুড়ী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “লাজ-লজ্জা সব ত্যাগ করে জামায়ের সেবায় নিয়োজিত আছি।আজ এই সহায়তা আমাদের জন্য আল্লাহর রহমত।”
প্রতিটি প্রাপক পরিবারের চোখেমুখে প্রতিফলিত হয়েছে অসীম কৃতজ্ঞতা, দোয়া আর অশ্রুসিক্ত আনন্দ। তাদের হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত হয়েছে একটাই প্রার্থনা—দুঃসময়ে তারেক রহমানের এই মানবিক হাত যেন হয়ে ওঠে আলো ছড়ানো আলোকবর্তিকা, যা দুঃখ-দুর্দশার অন্ধকারে পথ দেখাবে সহমর্মিতার দিশা।